মা-বাবার আয়ু বাড়াবেন যেভাবে | ডা আবিদা সুলতানা
পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় আপনজন হলো আপনার বাবা-মা। এই মা আপনাকে ১০ মাস ১০ দিনে গর্ভে ধারণ করেছেন। এই বাবা নিজে না খেয়ে আপনার ভরনপোষণের ব্যবস্থা করেছেন। সেই বাবা-মাকে সবাই তার হৃদয়ের গহীন থেকে ভালোবাসে। বৃদ্ধ বাবা-মার যাতে কোনোরুপ কষ্ট না হয়, সেজন্য যা যা করতে হয় সবই করে।
কিন্তু তাদের ভালো খাবার, ভালো পোশাক বা উন্নত জীবন-যাপন দিলেই কি তারা প্রশান্তি অনুভব করে? না কারণ এসময় তাদেরকে একাকিত্ব চেপে ধরে। আর এই একাকিত্বই তৈরি করে মানসিক যন্ত্রণা। ফলে এটা তাদের ধীরে ধীরে নিঃশ্বেষ করে ফেলে।
চাকরি বা জীবন পরিচালনায় সন্তানরা যখন দূরে থাকে, খুব কাছের প্রিয়জনকে যখন হারিয়ে ফেলে বা জীবনের শেষ প্রান্তে এসে অনেকেই নিজেকে অসহায় মনে করে। এসবই তাদের মধ্যে হতাশা, দুশ্চিন্তা, এবং রোগ-ব্যাধির ঝুঁকি বাড়ায়। এমনকি এটি বার্ধক্যকে ত্বরান্বিত করে এবং মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ায়।
কানাডার কুইনস ইউনিভার্সিটির একটি সাম্প্রতিক গবেষণা জানিয়েছে, মা-বাবার সঙ্গে সন্তানদের সময় কাটানো তাদের দীর্ঘ এবং সুস্থ জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একাকিত্বের প্রভাব সরাসরি বার্ধক্যকে ত্বরান্বিত করে এবং বয়সজনিত নানা রোগের ঝুঁকি বাড়ায় বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে কানাডার প্রায় ৩৮ শতাংশ মানুষই একাকিত্বে ভুগছেন, যা তাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
গবেষণাটি ১,৬০০ জন বয়স্ক মানুষের ওপর ২০ বছর ধরে পরিচালিত হয়েছে, যাদের বয়স ৬৫ থেকে ৮১ বছরের মধ্যে। এতে দেখা যায়, যারা একাকিত্বে ভুগছেন, তাদের গড় আয়ু সঙ্গী, সন্তান বা বন্ধুদের সঙ্গে থাকা ব্যক্তিদের তুলনায় কম। গবেষণায় আরও প্রকাশ পায়, ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে ২৩ শতাংশ একা হয়ে যাওয়ার পর ৬ বছরের মধ্যে মারা গেছেন, যেখানে সন্তান বা সঙ্গীসহ থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে ওই সময়ের মধ্যে মৃত্যুহার ছিল মাত্র ৭ শতাংশ।
কেন সময় দিবেন বয়স্ক মা-বাবাকে ?
আপনি আপনার শৈশব-কৈশোর ও যৌবনকাল বাবা-মায়ের সঙ্গে কাটালেন। কিন্তু তাদের বৃ্দ্ধ বয়ছে আপনার নিজস্ব কাজে তাদের থেকে অনেক দূরে গেলেন। এই পরিবর্তন মা-বাবার জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে যদি একজন মা-বাবা আরেকজনের সঙ্গে না থাকেন, তখন একাকিত্ব আরও বেড়ে যায়।
বয়স বাড়ার সঙ্গে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কার্যকারিতা কমতে থাকে এবং যদি কেউ একা থাকেন, তার বেঁচে থাকার উদ্দেশ্য বা উদ্দীপনা না থাকলে, এই প্রক্রিয়া দ্রুত হতে পারে। সামাজিক বা পারিবারিক জীবনযাপনের অভাবে বয়স্কদের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা আরও বাড়তে পারে। একাকিত্বের কারণে দুশ্চিন্তা শুরু হয়, যা পরবর্তীতে নানা শারীরিক ও মানসিক অসুখের কারণ হতে পারে।
আপনার মা-বাবা সুস্থভাবে বেঁচে থাকার প্রত্যাশা যদি করেন, তাহলে তাদের সঙ্গে সময় কাটান। তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন, নিয়মিত কথা বলুন, হাঁটতে বের হন এবং তাদের ছোট ছোট দায়িত্ব দিন। দূরে থেকেও নিশ্চিত করুন, তারা যেন একা না হয় এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে তাদের যুক্ত করার চেষ্টা করুন।
ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health
- ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।
Follow Me -
Facebook : Dr. Abida Sultana
Youtube : Dr. Abida Sultana
tiktik : Dr. Abida Sultana
No comments