বেশি বয়সে বাবা হওয়ার ঝুঁকি | ডা আবিদা সুলতানা
যুগ পাল্টেছে। মানুষের শখ, আহ্লাদ এমনকি রুচিতেও পরিবর্তন এসেছে। জীবনযাত্রায় ছন্দপতন হরহামেশাই দেখা মেলে। পড়াশোনা, ক্যারিয়ার, বিয়ে, সন্তান, সংসারের ক্ষেত্রেও ব্যাপক পার্থক্য তৈরি হয়েছে। ক্যারিয়ার গড়তেই জীবন থেকে দীর্ঘ সময় হারিয়ে যায়। অর্থাৎ কলেজ পাড় করতেই ২১ বছর। স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা শেষ করতে করতে বয়স ২৩ কি ২৪।
তারপর কেউ যদি মনে করেন পিএইচডি করবেন, তাহলে আরও বছর পাঁচ কি ছয়ের ধাক্কা। তারপর চাকরি পেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে, সমাজের বুকে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে করতেই করতেই বছর ৩২-৩৩।
এরপর দাম্পত্য জীবনের আনন্দ উপভোগ করে যতদিনে বাবা হওয়ার কথা ভাবছেন, ততদিনে বয়স প্রায় ৪০-এর কোঠায়। কিন্তু বেশি বয়সে সন্তান ধারণ করতে গেলে যেমন নারীদের নানা সমস্যা হতে পারে, তেমনই কিন্তু বেশি বয়সে পিতৃত্বের স্বাদ নেওয়ার ক্ষেত্রে ছেলেদেরও কিছু ঝুঁকি থাকে।
বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই কমতে থাকে পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা এবং মান। শুক্রাণুর গতিশীলতা হ্রাস, পরিমাণ হ্রাস, ডিএনএ ফ্র্যাগমেন্টেশন বৃদ্ধির মতো নানা সমস্যা দেখা যায়। এমনকি বয়স বাড়লে পিতা হওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষদের মিউটেশন বা জিনগত নানা সমস্যা দেখা দেয়, যা পরবর্তীতে শিশুর শরীরে বাহিত হয়।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে পুরুষদের প্রজনন কোষ বা শুক্রাণুতে ডি নোভা মিউটেশনের অস্তিত্ব বাড়তে থাকে। যা পরবর্তী প্রজন্মের শরীরেও সঞ্চারিত হতে পারে। ফলে সেই শিশুর নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি বয়সে বাবা হলে সন্তানদের মধ্যে জটিল মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। বাইপোলার ডিজঅর্ডার বা অ্যাটেনশন হাইপারঅ্যাক্টিভিটির মতো নানা ডিজ অর্ডারের ঝুঁকিও বাড়ে।
গবেষণায় দেখা যায়, ২০ বছরের বেশি বয়সের বাবার সন্তানদের ২৫টির মতো জটিলতার সম্ভাবনা দেখা যায়। ৪০ বছরের বাবার সন্তানদের সে সম্ভাবনা থাকে ৬৫টি জটিলতার। অর্থাৎ বাবার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুর জটিলতার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। মোটকথা, শিশুর শারীরিক ও মানসিক জটিলতার ৯৭ ভাগ কারণ বেশি বয়েসে বাবা হওয়া বা সন্তান জন্ম দেয়া।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, ১৯৭০ সাল থেকে উন্নত দেশগুলোয় শিল্পবিপ্লব শুরু হয়েছে আর এ শিল্পবিপ্লবের কারণে পুরুষ বেশি বয়সে বাবা হচ্ছেন। এতে উন্নত বিশ্বে অটিজম ও অন্যান্য মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু জন্মানোর সংখ্যাও অনেক বেড়ে গেছে। তাই বলা যায়, সুস্থ-স্বাভাবিক শিশু জন্ম দিতে চাইলে অন্তত প্রথম সন্তানটি সর্বোচ্চ ৩৫ বছরের মধ্যে জন্মদানে উৎসাহিত করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। নতুবা বাবা হিসেবে আপনাকে ঝুঁকির মধ্যে থেকে একটা অজানা শঙ্কায় থাকতে হবে।
ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health
- ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।
Follow Me -
Facebook : Dr. Abida Sultana
Youtube : Dr. Abida Sultana
tiktik : Dr. Abida Sultana
No comments