Header Ads

শ্বেতী রোগ কি ছোঁয়াচে ও নিরাময়যোগ্য? | ডা আবিদা সুলতানা | Is leukoplakia contagious and curable? | Dr. Abida Sultana

শ্বেতী রোগ কি ছোঁয়াচে ও নিরাময়যোগ্য? | ডা আবিদা সুলতানা | Is leukoplakia contagious and curable? | Dr. Abida Sultana

আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ আছেন, যাদের ত্বকে দুধ-সাদা ছোপ দেখা যায়। ত্বকের এই রঙের পরিবর্তনকে বলা হয় শ্বেতী রোগ বা ধবল রোগ, ইংরেজিতে যাকে বলা হয় ভিটিলিগো বা লিউকোডার্মা।

অনেকেই ভুলভাবে মনে করেন, এটি ছোঁয়াচে ও অভিশপ্ত রোগ। ফলে শ্বেতী রোগীদের এড়িয়ে চলার প্রবণতা দেখা যায়। এতে রোগীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন, হীনমন্যতায় ভোগেন। অনেকে মনে করেন এ রোগ হলে আর কখনও ভালো হয় না—এমন অনেক কুসংস্কার আর ভ্রান্তি আছে। কিন্তু একটু সচেতন হলে বা যথাসময়ে চিকিৎসা নিলে শ্বেতী রোগ ভালো হয়, এটাও অনেকে জানেন না।

এই রোগের মূল কারণ ত্বকে মেলানিনের ঘাটতি। মেলানোসাইট নামক কোষ মেলানিন তৈরি করে, যা ত্বকের স্বাভাবিক রঙ ধরে রাখতে সাহায্য করে। যখন এই কোষ ধ্বংস হয়ে যায়, তখন সেই অংশে মেলানিন উৎপন্ন হয় না, ফলে ওই অংশটি সাদা হয়ে যায়।

শ্বেতী রোগ কতটা সাধারণ?

যুক্তরাজ্যের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় ১ শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। ‘ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ’ অনুযায়ী বর্তমান বিশ্বের জনসংখ্যা ৮০০ কোটিরও বেশি, ফলে শ্বেতী রোগীর সংখ্যা ৮ কোটিরও বেশি।

২০১১ সাল থেকে ২৫ জুন ‘ওয়ার্ল্ড ভিটিলিগো ডে’ হিসেবে পালন করা হয়। কারণ এই দিনেই কিংবদন্তি মার্কিন গায়ক মাইকেল জ্যাকসন মারা যান, যিনি নিজেও শ্বেতী রোগে ভুগছিলেন।

কেন হয় এই রোগ?

মূলত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার (ইমিউন সিস্টেম) ত্রুটির কারণে শ্বেতী রোগ হয়। ইমিউন সিস্টেম ভুলবশত মেলানোসাইটকে ক্ষতিকর উপাদান ভেবে ধ্বংস করে। জিনগত পরিবর্তন (জেনেটিক মিউটেশন) শ্বেতী রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ৩০টিরও বেশি জিন এই রোগের সঙ্গে যুক্ত। শতকরা ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে এই রোগ বংশগত। তবে এটি একদমই ছোঁয়াচে নয়—এ তথ্য নিশ্চিত করেছে এনএইচএস (যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস) ও ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক।

এ ছাড়া মানসিক চাপ, অতিবেগুনী রশ্মি, বিষাক্ত রাসায়নিকের সংস্পর্শ এবং শারীরিক আঘাত থেকেও এই রোগ হতে পারে।

ঝুঁকিপূর্ণ কারা?

শ্বেতী রোগ যে কারও হতে পারে। তবে গাঢ় ত্বকের ক্ষেত্রে এটি বেশি দৃশ্যমান হয়। সাধারণত ৩০ বছরের আগেই রোগের লক্ষণ দেখা দেয়।

অটোইমিউন রোগ যেমন টাইপ ১ ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, এনিমিয়া, কিংবা হরমোনজনিত সমস্যা থাকলে ঝুঁকি বাড়ে। সন্তান জন্মের পর, লিভার বা কিডনির সমস্যায় বা মেলানোমা (ত্বকের ক্যান্সার) হলেও শ্বেতী রোগ হতে পারে।

লক্ষণ কী কী?

ঠোঁট, চোখ, আঙুল, কবজি, পা, বগল, যৌনাঙ্গ, নিতম্ব, মুখ বা নাকের পাশে রোগের লক্ষণ বেশি দেখা যায়। মাথার ত্বক, ভ্রু, দাড়িতেও ছড়াতে পারে। শুরুতে হালকা ফ্যাকাশে দাগ হয়, যা সময়ের সঙ্গে সাদা হয়ে যায়। কখনও দাগের চারপাশ ফ্যাকাশে ও ভেতরের অংশ একদম সাদা হয়। আক্রান্ত অংশে চুল থাকলে সেগুলোও সাদা বা রূপালি হয়ে যেতে পারে।

সাধারণত এই রোগে ত্বক শুষ্ক হয় না, তবে চুলকানি থাকতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, ত্বকে প্যাচ হলেই তা শ্বেতী রোগ নয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

চিকিৎসা কী?

এই রোগের চিকিৎসা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘ছোট আকৃতির ও সীমিত শ্বেতী মলম বা ওষুধে সেরে যেতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মলম লাগানো বা ওষুধ সেবনের পাশাপাশি সকালবেলার রোদ লাগাতে হবে শ্বেতী আক্রান্ত স্থানে। বড় আকারের শ্বেতী হলে মলম আর ওষুধে কাজ হতে প্রায় দুই বছর লাগতে পারে। ওষুধে কাজ না হলে অস্ত্রোপচার। যত অল্প বয়সে শ্বেতীর চিকিৎসা শুরু করা যায় তত ভালো।

প্রতিরোধে করণীয়

সূর্যের আলো থেকে নিজেকে রক্ষা করুন

নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন

মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন

অটোইমিউন রোগের চিকিৎসা নিন

সর্বোপরি, শ্বেতী রোগ ছোঁয়াচে বা অনিরাময়যোগ্য নয়—এটি জানানো ও সচেতনতা বাড়ানো আমাদের সবার দায়িত্ব।


শ্বেতী রোগ কি ছোঁয়াচে ও নিরাময়যোগ্য? | ডা আবিদা সুলতানা

Is leukoplakia contagious and curable? | Dr. Abida Sultana


ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health

ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।


Follow Me -

Facebook : Dr. Abida Sultana 

Youtube : Dr. Abida Sultana 

X : Dr. Abida Sultana 

tiktik : Dr. Abida Sultana 

No comments

Powered by Blogger.