আপনার মানসিক স্বাস্থ্যে বইয়ের ভূমিকা | ডা আবিদা সুলতানা | The Role of Books in Your Mental Health | Dr. Abida Sultana
যারা বই ভালোবাসেন, তারা জানেন – একটি ভালো বই কতটা শক্তিশালী হতে পারে। এটি হতে পারে একাকিত্বের সঙ্গী, মানসিক শান্তির উৎস, জ্ঞানের দরজা খোলার চাবিকাঠি।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এখন অনেকেই পাঠ্যবই ছাড়া অন্য কোনো বই পড়তেই চান না। বিশেষ করে তরুণ সমাজের অনেকেই মনে করেন পাঠ্যবইয়ের বাইরের বই পড়া সময়ের অপচয়। সামাজিক মাধ্যমের আসক্তি, প্রযুক্তির সহজলভ্যতা এবং পড়ার প্রতি আগ্রহের অভাবে বইয়ের প্রতি ভালোবাসা কমে যাচ্ছে। অথচ বই পড়ার উপকারিতা কেবল একাডেমিক সুফলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি মানুষের চিন্তাভাবনা, আচরণ, আবেগ এবং মননশীলতা গঠনে অমূল্য ভূমিকা রাখে। সেই সঙ্গে প্রতিটি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আছ বই পড়ার চমৎকার প্রকাব। চলুন জেনে নিই বই পড়ার কয়েকটি উপকারিতা -
১. মানসিক চাপ কমানোর সবচেয়ে সহজ পথ – একটি বই
মানসিক চাপ বা স্ট্রেস – এই শব্দটি আজ আমাদের জীবনের নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। পড়াশোনার চাপ, পারিবারিক দায়িত্ব, চাকরির প্রতিযোগিতা কিংবা সম্পর্কের টানাপোড়েন – সবকিছু মিলিয়ে আমাদের মনে জমে ওঠে এক অদৃশ্য ভার। এই ভার হালকা করতে অনেকে বেছে নেন প্রযুক্তিনির্ভর বিনোদন, আবার কেউ কেউ আশ্রয় নেন বইয়ের মধ্যে।
বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, বই পড়া মানসিক চাপ কমাতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্সের এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র ৬ মিনিট বই পড়লে ৬৮ শতাংশ পর্যন্ত স্ট্রেস কমে যেতে পারে। এটি গান শোনা, হাঁটাহাঁটি করা কিংবা গেম খেলার চেয়েও বেশি কার্যকর।
কেন এমন হয়?
বই পড়ার সময় আমরা অন্য এক জগতে প্রবেশ করি। বাস্তব জীবনের চাপ ও দায়িত্ব কিছু সময়ের জন্য ভুলে গিয়ে আমরা ডুবে যাই গল্পের চরিত্র, পরিবেশ ও আবেগের মধ্যে। এই ‘মেন্টাল এস্কেপ’ আমাদের মনকে প্রশান্ত করে, চিন্তাকে হালকা করে, এবং এক ধরনের মানসিক মুক্তি দেয়।
বিশেষ করে গল্প, আত্মজীবনী, কবিতা বা অনুপ্রেরণামূলক বই মানসিকভাবে আমাদের সহানুভূতিশীল, শান্ত ও ইতিবাচক করে তোলে। বইয়ের পাতায় পাতায় ছড়িয়ে থাকা শব্দেরা আমাদের আবেগকে আলতোভাবে ছুঁয়ে যায়, এবং অজান্তেই আমরা হালকা অনুভব করি।
২. মনোযোগ ও ধৈর্য বাড়ায় বই
বর্তমান যুগে আমাদের মন বারবার ছুটে যায় বিভিন্ন দিকে। বই পড়া আমাদের এক জায়গায় মনোযোগ ধরে রাখতে শেখায়, যা পড়ালেখায় দীর্ঘমেয়াদে ফোকাস বাড়াতে সহায়তা করে।
৩. কল্পনাশক্তি ও সৃজনশীলতা বিকাশ করে
গল্প পড়ার সময় আমরা চরিত্র, স্থান ও সময় কল্পনা করি। এতে আমাদের কল্পনাশক্তি ও সৃজনশীল ভাবনার প্রসার ঘটে। পড়তে পড়তে অনেকে লিখতেও পটু হয়ে ওঠেন। বাস্তাব জীবনে লেখার এই দক্ষতার মূল্য আপনি কর্মক্ষেত্রেও পাবেন।
৪. একাকিত্ব ও বিষণ্নতা কমায়
একটি বই কখনো আমাদের একা থাকতে দেয় না। একাকিত্বের মুহূর্তে এটি হয়ে ওঠে একজন সাথী, একজন বোঝাপড়ার বন্ধু।
মানসিক স্বাস্থে্যর উন্নতির পাশাপাশি বই পড়ার আরও কিছু উপকারিতা আছে। যেমন-
শব্দভাণ্ডার ও ভাষার দক্ষতা বৃদ্ধি করে
নিয়মিত বই পড়লে নতুন শব্দ শেখা যায়, ভাষা প্রয়োগে সাবলীলতা আসে। এটি পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখিতেও সহায়ক।
নৈতিক শিক্ষা
বই আমাদের নৈতিক শিক্ষা দানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় অনেক বইয়ের গল্পে থাকে মানবিক ও নৈতিক বার্তা। এটি আমাদের চারিত্রিক গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তাই আমরা নিজের সঙ্গে একটি অঙ্গীকার করতে পারি – প্রতিদিন অন্তত কিছুটা সময় বই পড়ার জন্য রাখবো। প্রযুক্তির এই আসক্তির মাঝেও যদি আমরা কিছুটা সময় বইয়ের জন্য রাখি, তাহলে তা হতে পারে আমাদের মানসিক সুস্থতা ও আত্মিক শান্তির একটি সহজ উপায়।
আপনার মানসিক স্বাস্থ্যে বইয়ের ভূমিকা | ডা আবিদা সুলতানা
The Role of Books in Your Mental Health | Dr. Abida Sultana
আপনার মানসিক স্বাস্থ্যে বইয়ের ভূমিকা | ডা আবিদা সুলতানা
The Role of Books in Your Mental Health | Dr. Abida Sultana
ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health
- ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।
Follow Me -
Facebook : Dr. Abida Sultana
Youtube : Dr. Abida Sultana
tiktik : Dr. Abida Sultana
No comments