Header Ads

ছোঁয়াচে রোগ স্ক্যাবিস ছড়াচ্ছে দ্রুতগতিতে, বাঁচবেন যেভাবে | ডা আবিদা সুলতানা | Scabies, a contagious disease, is spreading rapidly, here's how to survive | Dr. Abida Sultana

ছোঁয়াচে রোগ স্ক্যাবিস ছড়াচ্ছে দ্রুতগতিতে, বাঁচবেন যেভাবে | ডা আবিদা সুলতানা | Scabies, a contagious disease, is spreading rapidly, here's how to survive | Dr. Abida Sultana

আবহাওয়ার কারণে বছরের একেক সময় ত্বকের একেকটি সমস্যা দেখা দেয়। কখনো শুষ্কতা, কখনো ব্রন, কখনো র‌্যাশ। সেসব অল্প যত্নে সহজে সেরেও যায়। তবে গরমের এ সময় ত্বকে ছোট ছোট লাল ফুসকুড়ি দেখলে মোটেও অবহেলা করবেন না। কারণ দেশে বর্তমানে স্ক্যাবিস নামক চর্মরোগটি মহামারি আকার ধারণ করছে।

“বাংলাদেশের কুমিল্লা ও রাজশাহীতে ছোঁয়াচে রোগ ‘স্ক্যাবিস’র প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এই দুই মহানগরের সরকারি হাসপাতালগুলোয় খোস-পাঁচড়াজাতীয় এ রোগে আক্রান্ত রোগীর ভিড় বাড়ছে।”

এই দুটি এলাকায় বেশি ছড়ানোর খবর মিললেও সারাদেশে এই চর্মরোগটি দ্রুতগতিতে ছড়াচ্ছে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য এটি বেশি মারাত্মক। চিকিৎসকরা বলছেন, শত শত চর্ম রোগের মধ্যে এই স্ক্যাবিস সবচেয়ে বেশি ছোঁয়াচে। তাই দ্রুত জেনে নিন এই রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার-

স্ক্যাবিস এমন একটি চর্মরোগ, যা সারকোপটিস স্ক্যাবি (Sarcoptes Scabiei) নামক এক ধরনের ক্ষুদ্র পরজীবী বা মাইটের কারণে হয়। এটি খুবই সংক্রামক এবং চুলকানির মাধ্যমে এর প্রধান উপসর্গ প্রকাশ পায়।

কীভাবে ছড়ায় স্ক্যাবিস?

স্ক্যাবিসে আক্রান্ত কারও সরাসরি সংস্পর্শ, আক্রান্ত ব্যক্তির জামা-কাপড়, বিছানা, তোয়ালেসহ ব্যবহৃত জিনিসপত্রের মাধ্যমে এই মাইট একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরে ছড়ায়। বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, যেমন বস্তি এলাকা, হোস্টেল– যেখানে অনেক মানুষ একসঙ্গে থাকে, সেখানে স্ক্যাবিস বেশি হয়। যারা নিয়মিত কাপড়-চোপড় পরিষ্কার করেন না, নিয়মিত গোসল করেন না, তাদের মাধ্যমে এই পরজীবী বেশি আক্রমণ করে।

বিষয়টি এমন নয় যে হঠাৎ করে স্ক্যাবিসের আবির্ভাব হয়েছে। এই রোগটি সারা বছরই থাকে, তবে গরমের সময় বেশি ছড়ায়।

যেসব লক্ষণ দেখে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন

১. স্ক্যাবিসের প্রধান উপসর্গ হলো সারা শরীরে চুলকানি।

২. শরীরের বিভিন্ন ভাঁজে ভাঁজে, যেমন দুই আঙুলের ফাঁক, কোমর, ঘাড়, নিতম্ব, যৌনাঙ্গ, হাতের তালু, কব্জি, বগলের নিচে, নাভি ও কনুই, এসব স্থানে স্ক্যাবিসের সংক্রমণ বেশি হয়।

৩. ত্বকে ছোট ছোট লাল দানাদার র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি ওঠে, যা খুব চুলকায়। অনেক ক্ষেত্রে র‌্যাশগুলো থেকে পানির মতো তরল বের হতে পারে।

৪. সাধারণত রাতে চুলকানি বেশি হয়।

৫. আক্রান্ত স্থানে চুলকানির ফলে ক্ষত হতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে অন্য সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি দেখা দেয়।

৬. এ রোগের উপসর্গ পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুদের ক্ষেত্রে অনেক সময় ভিন্ন হতে পারে।

শিশুদের ওপর যেসব প্রভাব পড়তে পারে

১. ঘুমের ব্যাঘাত: স্ক্যাবিস হলে বিশেষ করে রাতে বেশি চুলকানি হয়, শিশুর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। অনেক বাচ্চারা চুলকাতে চুলকাতে ঘুম ভেঙে যায়, যন্ত্রনায় কান্নাকাটি করে।

২. চামড়ায় ফুসকুড়ি ও ক্ষত: স্ক্যাবিস হলে ঘর্ষণ এবং চুলকানোর ফলে চামড়ায় ঘা ও ইনফেকশন হতে পারে। কখনও কখনও চামড়ার নিচে পুঁজ জমে যেতে পারে।

৩. এটি মারাত্মক ছোঁয়াচে একটি রোগ। তাই পরিবারের কারও স্ক্যাবিস থাকলে শিশু সহজেই আক্রান্ত হবে। কিন্তু উপসর্গে ভিন্নতা থাকায় বা শিশুর শরীরে ঘামাচি থাকলে রোগ নির্ণয়ে দেরি হয়ে যেতে পারে।

৪. দীর্ঘদিন থাকলে সেকেন্ডারি ইনফেকশন: স্ক্যাবিসের সঠিক চিকিৎসা না হলে শরীরে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, সেলুলাইটিস, এমনকি শিশুর কিডনি সমস্যাও হতে পারে।

৫. মানসিক অস্বস্তি: অতিরিক্ত চুলকানি ও অস্বস্তির কারণে শিশুর মানসিক চাপ ও অস্থিরতা তৈরি হয়।

স্ক্যাবিস থেকে বাঁচবেন যেভাবে

১. চিকিৎসা: লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। এই রোগের চিকিৎসায় ডাক্তারের পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা অত্যন্ত জরুরি। কেননা ওষুধের নিয়মে ভুল হলে এই মাইট শরীর থেকে বিদায় হবেনা। চুলকানি কমানোর জন্য ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করতে চাইলেও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে করুন।

২. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: আক্রান্ত ব্যক্তির পোশাক, বিছানার চাদর, তোয়ালে ইত্যাদি নিত্য ব্যবহারের কাপড় গরম পানিতে ৩০ মিনিট ধরে সিদ্ধ করে ধুয়ে রোদে শুকান। সম্ভব হলে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিসপত্র থেকে ৩ দিন পর্যন্ত দূরে রাখতে হবে, কারণ রোগ সৃষ্টিকারী মাইটটি দুই থেকে তিন দিন বেঁচে থাকে। সাবান দিয়ে গোসল করার পর শরীর ভালো করে মুছে শুকাতে হবে।

৩. একসঙ্গে চিকিৎসা: পরিবারের সকল সদস্যকে একসঙ্গে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। এমনকি উপসর্গ না থাকলেও আপনি যদি আক্রান্ত কারো সংস্পর্শে এসে থাকেন, তাহলে চিকিৎসা নিন।

৪. নিয়মিত হাত ধোয়া ও শরীর পরিষ্কার রাখাবেন। বাইরে থেকে বাসায় ফিরে সবার আগে ভালো ভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস করবেন। এতে পুনরায় ইনফেকশন হবার সম্ভাবনা কমে যায়।

৫. বিশেষ পরামর্শ: শিশুদের জন্য শিশু বিশেষজ্ঞ এবং গর্ভবতীদের নারীদের গাইনী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ এই রোগের ওষুধগুলো শিশু ও নারীদের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

৬. ঘর-বাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা: শুধু পরনের কাপড় না, ঘরের অন্যান্য স্থান, বিছানার চাদর, পর্দা এসবও নিয়মিত পরিস্কার করুন।

৭. অ্যালার্জি: যেসব খাবার খেলে রোগীর অ্যালার্জি হয়, সেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

৮. পুষ্টিকর খাবার: স্ক্যাবিস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে পুষ্টিকর খাবার ও ফলের রস খেতে হবে।

৯. রোগ সেরে যাওয়ার পর ব্যবহৃত জিনিসপত্র খুব ভালোভাবে গরম পানিতে পরিস্কার করে কড়া রোদে শুকিয়ে নিন।

স্ক্যাবিস সৃষ্টিকারী মাইটটি শরীরে ঢোকার প্রায় দুই থেকে তিন সপ্তাহ পরে এর লক্ষণ দেখা যায়। তাই আপনার লক্ষণ না থাকলেও নিয়মিত নিজেকে পরিস্কার রাখুন। আক্রান্ত কারো সংস্পর্শে আসলে যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন করুন। সুস্থ থাকুন।


ছোঁয়াচে রোগ স্ক্যাবিস ছড়াচ্ছে দ্রুতগতিতে, বাঁচবেন যেভাবে | ডা আবিদা সুলতানা

Scabies, a contagious disease, is spreading rapidly, here's how to survive | Dr. Abida Sultana


ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health

ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।


Follow Me -

Facebook : Dr. Abida Sultana 

Youtube : Dr. Abida Sultana 

X : Dr. Abida Sultana 

tiktik : Dr. Abida Sultana 

No comments

Powered by Blogger.