Header Ads

যে বোতলে পানি খাচ্ছেন, তা বিষাক্ত নয় তো? জেনে রাখুন | ডা আবিদা সুলতানা | The water you drink from the bottle is not poisonous, right? Know this | Dr. Abida Sultana

যে বোতলে পানি খাচ্ছেন, তা বিষাক্ত নয় তো? জেনে রাখুন | ডা আবিদা সুলতানা | The water you drink from the bottle is not poisonous, right? Know this | Dr. Abida Sultana

ঘরে বাইরে এখন প্লাস্টিকের পেট বোতলের ছড়াছড়ি। খাবার রাখা থেকে পানি রাখা— সবেতেই এই প্লাস্টিক বোতল । সারা দিন আমরা নানারকম ভাবে প্লাস্টিকের সংস্পর্শে আসি। তার কোনওটা ভীষণ ভাবে ক্ষতিকারক, কোনওটা কম। প্রতিটি প্লাস্টিকের বোতল বা পাত্রের নিচে ত্রিভুজাকৃতি ছাঁচের মধ্যে কিছু নম্বর লেখা থাকে?  ১ থেকে ৭ পর্যন্ত নম্বরের কোনও একটি এই প্রতীকের মধ্যে থাকে। আর প্রতিটা নম্বরই আলাদা অর্থ বহন করে। এই নম্বরই বলে দেয় ওই পাত্রটি সর্বাধিক কত দিন বা কত বার ব্যবহার করা উচিত। আপনার ব্যবহৃত প্লাস্টিকগুলো কোনটা কোন ক্যাটেগরিতে পড়ে জানেন?  আসুন জেনে নেওয়া যাক কোন নম্বরের কী মানে-

প্রতিটা প্লাস্টিকের গায়েই একটি ত্রিভুজাকৃতি চিহ্ন থাকে। এটা আসলে রিসাইকেল অর্থাৎ পুনর্ব্যবহারযোগ্যতার প্রতীক। অর্থাৎ আপনি রোজ যে বোতলে পানি খাচ্ছেন, যে প্লাস্টিকের মধ্যে তাজা সবজি ভরে ফ্রিজে রেখে দিচ্ছেন বা আরও কোনও দৈনন্দিন কাজে লাগাচ্ছেন সেটা কতটা নিরাপদ বা আপনার জন্য আদৌ নিরাপদ কি না তা বোঝা যাবে এই প্রতীক থেকেই।

ত্রিভুজের মধ্যে ‘১’ লেখা থাকলে এর অর্থ হলো- পাত্রটি পলিথাইলিন টেরেপথ্যালেট জাতিয় পলিথিন দিয়ে তৈরি। অর্থাৎ, এই প্লাস্টিকের পাত্রগুলো মাত্র একবারই ব্যবহারযোগ্য। একবারের বেশি এগুলো ব্যবহার করা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়।

যদি পাত্রের নিচে ত্রিভুজের মধ্যে ‘২’ লেখা থাকে তাহলে তার অর্থ হলো- পাত্রটি ঘন, অস্বচ্ছ পলিথিন বা এইচডিপিই জাতিয় পলিথিন দিয়ে তৈরি। এই জাতীয় পলিথিন দিয়ে শ্যাম্পু, ডিটারজেন্ট, টয়লেট ক্লিনারের বোতল তৈরি হয়। এগুলিতে খাবার বা কোনো রকম পানীয় রাখা একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়।

পাত্রের নিচে ত্রিভুজের মধ্যে ‘৩’ লেখা থাকলে তার অর্থ হলো- এই ধরনের পাত্র পলিভিনিল ক্লোরাইড বা পিভিসি দিয়ে তৈরি। খাবারের শক্ত মোড়ক বা রান্নার তেলের পাত্র এই জাতীয় পলিথিন দিয়ে তৈরি করা হয়। একবারের বেশি এগুলো ব্যবহার করা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়।

যদি পাত্রের নিচে ‘৪’ লেখা থাকে তাহলে তার অর্থ হলো- এই ধরনের পাত্র এলডিপিই জাতিয় পলিথিন দিয়ে তৈরি। এই ধরনের পাত্রে একাধিকবার পানীয় জল বা খাবার রাখা যেতে পারে। তবে সপ্তাহ খানেকের বেশি ব্যবহার না করাই ভাল।

যদি পাত্রের নিচে ত্রিভুজের মধ্যে ‘৫’ লেখা থাকে তাহলে তার অর্থ হলো- এই ধরনের পাত্র ব্যবহার করা একেবারে নিরাপদ। সসের বোতল, জলের বোতল বা সিরাপের বোতল এই জাতীয় পলিথিন দিয়ে তৈরি।

পাত্রের নিচে ত্রিভুজের মধ্যে ‘৬’ লেখা থাকলে তার অর্থ হলো- এই ধরনের পাত্র পলিস্টিরিন বা স্টাইরোফোম জাতীয় উপাদান দিয়ে তৈরি। এই জাতীয় পলিথিন দিয়ে তৈরি পাত্রে খাবার গরম করা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। আর বেশি ব্যবহার না করাই ভালো।

যদি পাত্রের নিচে ত্রিভুজের মধ্যে ‘৭’ লেখা থাকে তাহলে তার অর্থ হলো- এই ধরনের পাত্র ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। খাবার বা কোনো রকম পানীয় রাখা একেবারেই উচিত নয়।

মনে রাখবেন ২, ৪ এবং ৫ নম্বর লেখা থাকলে সেগুলো তুলনামূলক নিরাপদ। নম্বর ১ লেখা বোতলও নিরাপদ হিসাবেই গণ্য হয়। ৬ এবং ৭ ভীষণ ভাবে ক্ষতিকর। তাই ৬ এবং ৭ লেখা নম্বরের বোতল অবশ্যই এড়িয়ে চলুন।

আরও একটি বিষয় জেনে রাখা দরকার, মাইক্রোওয়েভেবল প্লাস্টিক মানেই তা কিন্তু নিরাপদ নয়। এর অর্থ তা মাইক্রোওয়েভের তাপ সহ্য করতে সক্ষম। তা থেকে ক্ষতিকারক রাসায়নিক বেরিয়ে শরীরে বিষক্রিয়া ঘটাতেই পারে।

তবে প্ল্যাস্টিকের ওপর চিহ্ন বা সংখ্যা যাই থাকুক, তার অর্থ নিয়ে যতই তর্ক-বিতর্ক থাকুক, এর ব্যবহারের বিষয়ে বেশিরভাগ জনই কিন্তু সতর্কবাণী দিয়ে থাকেন। তাই প্লাস্টিকের ব্যবহার সম্পর্কে আপনিও সতর্ক থাকুন।

প্লাস্টিকের বোতলে পানি খাওয়ার অপকারিতা

ক্ষতিকর উপাদান: গরমে যখন প্রকৃতির তাপমাত্রা বাড়ে তখন স্বাভাবিকভাবে প্লাস্টিকের বোতলে থাকা পানিও গরম হয়ে যায়। এতে প্লাস্টিকের নানা উপাদান বোতলে থাকা পানিতে মিশে যায়। তাপমাত্রা বেড়ে গেলে ক্ষতিকারক উপাদানগুলোও অনেক বেশি মিশতে থাকে। আর সেই পানি পান করলে তা শরীরের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। তাই গরমে তৃষ্ণা নিবারণের আগে দেখে নিন সেটি প্লাস্টিকের বোতলে নেই তো!

ডায়াবেটিস, মেদ ও আরও অনেক সমস্যা: প্লাস্টিকে থাকে Biphenyl-A নামক একটি উপাদান। এই উপাদান গরম তাপ পেলে পানির সঙ্গে দ্রুত মিশে যায়। এটি শরীরে প্রবেশ করলে দেখা দিতে পারে ডায়াবেটিস, বন্ধ্যাত্ব, মেদ, মানসিক জটিলতার মতো সমস্যা। তাই এ ধরনের মারাত্মক সমস্যা থেকে দূরে থাকতে হলে প্লাস্টিকের বোতলে পানি পান করা বন্ধ করতে হবে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়: প্লাস্টিকের বোতলে পানি পান করার আছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব। আপনি যদি প্লাস্টিকের বোতলে রাখা পানি খান তবে সেই পানির সঙ্গে মিশে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ শরীরে প্রবেশ করে। ফলে কমতে থাকে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। সেখান থেকেই দেখা দেয় নানা অসুখের ভয়।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: প্লাস্টিকের বোতলে থাকে থ্যালেট নামক একটি ক্ষতিকর উপাদান। প্লাস্টিকের বোতলে পানি রাখলে তা পানির সঙ্গে মেশে। এই ক্ষতিকর উপাদান বাড়িয়ে দেয় লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি। সেইসঙ্গে এটি পুরুষের বন্ধ্যাত্বেরও কারণ হতে পারে।

পানির বোতলে কেন মেয়াদের তারিখ থাকে?

দোকান থেকে কিছু কেনার আগে একটা বিষয় মনে রাখতেই হয়— পণ্যটার মেয়াদ আছে তো? পণ্যের গায়ে লেখা মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ঠিকঠাক থাকলে নিশ্চিন্ত। না থাকলে হয়তো অভিযোগ করা হয় বা পণ্যটা বদলে নেওয়া হয়। কিন্তু পানি কেনার সময় কি বোতলের গায়ে মেয়াদের তারিখটা দেখেন? বেশির ভাগ মানুষই বলবেন, পানির আবার মেয়াদ কিসের? মেয়াদ যদি না-ই থাকে, তাহলে পানির বোতলে মেয়াদ উল্লেখ থাকে কেন? 

খেয়াল করলে দেখবেন, শিশুদের জন্য তৈরি ‘চাইল্ড কার সিটেরও’ মেয়াদ থাকে। এটারই-বা ব্যাখ্যা কী? যুক্তিসংগত ব্যাখ্যাই আছে। প্রতিদিন ব্যবহারে একসময় এসব সিট নষ্ট হয়ে যায়। এতে মেয়াদ শেষে ঘটে যেতে পারে যেকোনো দুর্ঘটনা। আর তাই রীতিমতো হিসাব কষে এর সঙ্গে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার একটা তারিখও সেঁটে দিতে হয়।

কোন ধরনের পাত্রে পানি পান করা স্বাস্থ্যকর?

প্লাস্টিকের পানির বোতলের পরিবর্তে ধাতুর বোতল ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে তেমন কোনো বিধিনিষেধ নেই। তা ছাড়া ধাতুর বোতলে দীর্ঘক্ষণ পানি ঠান্ডা বা গরম রাখার সুবিধা আছে। ধাতুর বোতল সাধারণত পুনরায় ব্যবহারযোগ্য। প্লাস্টিকের বোতল পরিবেশবান্ধব নয়। তাই নিত্য ব্যবহারের জন্য ধাতুর বোতলই ভালো।

স্টিলের বোতলে পানি রাখলেও তা খুব বেশি ভারী হয় না। হাত থেকে পড়ে ভেঙে যাওয়ার ভয়ও থাকে না। এই ধাতু পানির সঙ্গে কোনো বিক্রিয়ায় অংশ নেয় না। পানির মধ্যে ধাতব কোনো গন্ধ বা স্বাদও থাকে না। পানির বদলে গরম চা কিংবা কফিও রাখা যেতে পারে স্টিলের বোতলে।

অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি পানির বোতল স্টিলের চাইতে অনেকটাই হালকা, পরিবেশবান্ধব। তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, ঠান্ডা বা গরম যেকোনো ধরনের তরলের সঙ্গেই অ্যালুমিনিয়াম বিক্রিয়া করে। শরীরে অতিরিক্ত অ্যালুমিনিয়াম প্রবেশ করলে শারীরিক নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এই ধরনের বোতল বেশি ব্যবহার না করাই ভাল।

অনেক স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ ইদানীং তামার বোতলে পানি খান। তামার মধ্যে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাল রাখতে এবং হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। তবে তামা পানির সঙ্গে বিক্রিয়া না করলেও অ্যাসিডযুক্ত যে কোনো তরলের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে। সেজন্য পানি ছাড়া অন্য কোনো পানীয়ের জন্য তামার পাত্র ব্যবহার না করাই ভাল।

পানির পাত্র কেনার আগে যেসব বিষয় জেনে রাখা জরুরি

ধাতুর পাত্র স্বাস্থ্যকর হলেও কেনার সময়ে তার মান অর্থাৎ ‘ফুড গ্রেড’ দেখে তবেই কিনতে হবে। ধাতব বোতলের ভিতরে যেন রং কিংবা অন্য ধাতুর পরত না থাকে। দীর্ঘ দিন পানি রাখতে রাখেত সেই পরত কিন্তু পানির সঙ্গে মিশতে শুরু করতে পারে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই পানি ঠান্ডা বা গরম রাখার জন্য একান্তই যদি ‘ইনসুলেটেড’ বোতল কিনতেই হয়, সেক্ষেত্রে ভ্যাকিউম-যুক্ত ‘ডবল ওয়াল্‌ড স্টেনলেস স্টিল’ বোতল কেনাই ভাল।

মদের বোতলে পানি পান করা যাবে?

শুধু কোরআনেই নয় বরং নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও বহু হাদিসে মদ পান নিষিদ্ধ করেছেন। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

প্রত্যেক নেশাদ্রব্যই মদ, আর যাবতীয় মদই হারাম। (মুসলিম ও মেশকাত: ৩৬৩৮) 

আরেক হাদিসে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

মদ পানকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (ইবনে মাজাহ: ৩৩৭৬) 

যদি ভালোভাবে মদের বোতল পরিস্কার করা হয়, এর মধ্যে মদের কোনো চিহ্ন না থাকে, তাহলে এমন পাত্র বা বোতলে রাখা পানি পান করা বৈধ। যদিও ইসলামের প্রথম যুগে মদের পাত্রে রাখা পানি পান করতে নিষেধ করা হয়েছিল। ইসলামের প্রথম যুগে মূলত তিনটি কারণে মদের পাত্রে রাখা পানি পান করতে নিষেধ করা হয়েছিল। 

১. সেসব পাত্রে মদের চিহ্ন অবশিষ্ট ছিল। 

২. সে সময় সবেমাত্র মদ হারাম করা হয়েছিল। তাই মদের পাত্রে পানি পান করলে মদের কথা মনে হয়ে যেতে পারত। তাই সতর্কতামূলক এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। 

৩. মদের প্রতি যেন পরিপূর্ণ ঘৃণা সৃষ্টি হয়, সেজন্য তখন মদের পাত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। পরে যখন মদ হারাম হওয়ার বিষয়টি সবার জানা হয়ে যায়, এবং সাহাবিদের মধ্যে মদের প্রতি প্রচন্ড ঘৃণা জন্মে যায়, তখন ওই সব পাত্র ভালোভাবে পরিস্কার করে তাতে রাখা পানি পান ইত্যাদি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। (তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম: ৩/৩৫১)

একটি হাদিস পাওয়া যায়, হজরত বুরাইদা (রা.) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‌

আমি তোমাদের মদ রাখার পাত্রের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলাম। আসলে পাত্র কোনো কিছুকে হালাল বা হারাম করতে পারে না। তবে প্রতিটি মাদকদ্রব্য হারাম। (মুসলিম: ৫৩২৬; তিরমিজি: ১৮৬৯) 

তবে বোতলটি প্রথমে হারাম কাজে ব্যবহৃত হওয়ায় তা ব্যবহার না করাই উত্তম। এমন বোতল এড়িয়ে চলাই উচিত। এসব বোতল হারাম কাজের দিকে আগ্রহ তৈরি করে। মানুষের মনে কুমন্ত্রণা তৈরি করতে পারে।


যে বোতলে পানি খাচ্ছেন, তা বিষাক্ত নয় তো? জেনে রাখুন | ডা আবিদা সুলতানা

The water you drink from the bottle is not poisonous, right? Know this | Dr. Abida Sultana


ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health

ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।


Follow Me -

Facebook : Dr. Abida Sultana 

Youtube : Dr. Abida Sultana 

X : Dr. Abida Sultana 

tiktik : Dr. Abida Sultana 

No comments

Powered by Blogger.