হরমোনের সমস্যা বোঝার উপায় ও সমাধান | ডা আবিদা সুলতানা
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে নানারকমের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়, তার নানা রকমের কারণ আছে। সেই কারণ গুলির মধ্যে অন্যতম একটি হলো হরমোনের ভারসাম্য ঠিক না থাকা। শরীরের স্বাভাবিক কার্যাবলি ঠিক রাখতে হরমোন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইন্সুলিন, ইস্ট্রোজেন, ডোপামিন, এফএসএইচ, টিএসএইচ ইত্যাদি জৈবিক রাসায়নিক উপাদান মেজাজ, চুলের বৃদ্ধি, ওজন, প্রজনন ক্ষমতা, মানসিক অবস্থা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে।
মেয়েদের শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের অনেক লক্ষণ দেখা যায়। চল্লিশ বা পঞ্চাশ বছর বয়েসি নারীদেরও হরমোনের সমস্যা হয়। এতে করে অনেক নারীর বন্ধ্যত্ব দেখা দিতে পারে।
যেসব লক্ষণে আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন আপনি হরমোনের সমস্যায় ভুগছেন কি না। চলুন জেনে নেয়া যাক লক্ষণগুলো—
চুল পাতলা হয়ে যাওয়া
অল্প চুল তো সবারই ঝরে। কিন্তু যদি প্রতিদিন চুল ঝরতে থাকে এবং তার ফলে আপনার কপাল চওড়া এবং বড় হতে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে যে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক নেই। অতিরিক্ত চুল পড়া কিন্তু রোগ নয়, রোগের উপসর্গ মাত্র। তাই আর যাতে বেশি ক্ষতি না হয়, সেজন্য সবার আগে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ নিন। রাসায়নিক দেয়া বা প্রসেসড ফুড এড়িয়ে চলুন। প্লাস্টিকের পাত্রে খাওয়া, বা তাতে গরম খাবার রেখে খাওয়া কিংবা খাবার গরম করায় রাশ টানুন।
উৎকণ্ঠা
আপনার শরীরের হরমোনগুলোর মধ্যে ব্যালান্সঠিক নেই, বোঝার আরও একটা উপায় হল, যদি আপনি সব সময়েই একটা উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকেন। অনেক চেষ্টা করেও এই এংজাইটির কোনো সঠিক কারণ আপনি খুঁজে পাচ্ছেন না। আপনার যদি অতিরিক্ত এংজাইটি হয় এবং আপনার মনে হয় যে আপনার অবসাদ আসছে, তাহলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
হরমোনের অসুখ বাধানোর কারণগুলির অন্যতম মানসিক অশান্তি। সমীক্ষায় প্রকাশ, যে কোনও মারণ অসুখকে হঠাৎ ছ’ গুণ বাড়িয়ে দেওয়ার সামর্থ্য রাখে স্ট্রেস। কিন্তু একুশ শতকে স্ট্রেস থাকবেই। সুস্থতার জন্য নিজেকেই শুধরে নিতে হবে। মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা বাড়ান। মানসিক বিশ্রামের অবকাশ খুঁজে নিন।
চর্মরোগ
অনেক সময় স্কিনের কিছু ছোটোখাটো সমস্যা দেখা যায় নানা কারণে যেরকম কোনো নির্দিষ্ট খাবার বা কিছু থেকে এলার্জি, ধুলো কিংবা দূষণ থেকে স্কিনের সমস্যা হয়। কিন্তু এই সমস্যা যদি মাঝে মাঝেই হয় এবং জেদি দাগ-ছোপ ছেড়ে যায় আপনার ত্বকে তাহলে বুঝতে হবে যে আপনার শরীরে হরমোনের ব্যালান্স ঠিক নেই। হরমোনের সমস্যা দেখা দিলেই আগে ওজন কমান, ডায়েটে সংযম রাখুন। দিনের মধ্যে অন্তত আধা ঘণ্টা জোরে হাঁটুন। সময় না পেলে কিছুক্ষণ স্কিপিং করুন। যখনই পারবেন একটু হেঁটে নিন। হরমোন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কোমর টানটান রাখুন।
চোখের নিচে কালি পড়া
চোখের নিচে কালি পড়লে সাধারণত তার জন্য স্ট্রেস, ঘুমের অভাব, অতিরিক্ত পরিশ্রম কিংবা লিভারের সমস্যাকে আমরা দায়ী করে থাকি। কিন্তু আপনি কি জানেন যে টেস্টস্টেরন এবং প্রটেস্টস্টেরন এর ভারসাম্য ঠিক না থাকলে তখন ডার্ক সার্কেল দেখা যায় এবং ইনসোমনিয়ার মতো সমস্যা দেখা যায়। নিয়মিত হরমোনের রিস্ক ফ্যাক্টরগুলি চেকআপ করান। অর্থাৎ রক্তকণা ও চিনির পরিমাণ, রক্তচাপ, জরায়ু প্রাচীর স্বাভাবিক আছে কি না, খোঁজ রাখুন।
ব্রেস্টে পরিবর্তন
হরমোনের ব্যালান্স বিগড়েছে এটা বোঝার আরও একটি শারীরিক লক্ষণ হলো আপনার ব্রেস্টে কিছু কিছু পরিবর্তন দেখা যায়; যেমন ব্রেস্টে মাঝে মাঝে ব্যাথা অনুভব করা কিংবা ব্রেস্ট নিচের দিকে নেমে আসা কিংবা লাম্প অনুভব করা—যে কোনোটাই কিন্তু হরমোনাল ইম্ব্যালান্সের ফলে কোনো রোগের উপসর্গ হিসেবে দেখা দিতে পারে। তলপেটে আলতো অথচ একনাগাড়ে ব্যথা, মাথা ধরা, মুড অফ বা হঠাৎ রেগে যাওয়া—এমন সব উপসর্গকে অবহেলা করবেন না।
ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health
- ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।
Follow Me -
Facebook : Dr. Abida Sultana
Youtube : Dr. Abida Sultana
tiktik : Dr. Abida Sultana
No comments