Header Ads

রাতে দেরিতে খাওয়ার অভ্যাস? জানুন কী হয় | ডা আবিদা সুলতানা

রাতে দেরিতে খাওয়ার অভ্যাস, জানুন কী হয়, ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস

দৈনন্দিন জীবনে খাদ্যাভ্যাসের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে কিংবা অভ্যাসবশত অনেকেই রাতে দেরিতে খাবার খেয়ে থাকেন। বিশেষ করে শহুরে জীবন, অফিসের ব্যস্ততা, কিংবা বিনোদনের কারণে অনেকেই নিয়মিত রাত ১১টা বা তারও পরে রাতের খাবার খেয়ে থাকে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছে, এই অভ্যাস শরীরের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।

ঘুমের ব্যাঘাত থেকে শুরু করে ওজন বৃদ্ধি এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পর্যন্ত দেখা দিতে পারে। তাই যাদের রাতে দেরিতে খাবার অভ্যাস, তাদের এখনি উচিত নতুন করে খাবারের সময় ঠিক করা। মাঝে মাঝে দেরিতে খাবার খেলে তেমন কোনও ক্ষতি নেই, তবে প্রতিদিন যদি রাত ৯ টার পর খাবার খাওয়া হয় , তবে তা স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি : যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পেরেলম্যান স্কুল অব মেডিসিন পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা রাতে দেরিতে খায়, তাদের শরীরে বেশি ক্যালরি জমা হয় এবং ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কারণ, রাতে খাওয়া খাবার সহজে হজম হয় না, ফলে এটি চর্বি হিসেবে জমতে থাকে। আমাদের শরীর সূর্যের আলোর সঙ্গে যুক্ত। তাই আমরা যত দেরিতে খাই, খাবার তত বেশি আমদের অন্ত্রে থেকে যায়। যা হজমকে প্রভাবিত করে। যেহেতু সন্ধ্যার পর থেকেই বিপাক ক্রিয়া আস্তে আস্তে ধীর হয়ে যায়, তাই রাতের খাবার চর্বিতে রূপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থেকে। যার ফলে ধীরে ধীরে শরীরের অবাঞ্ছিত ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।

ঘুমের ব্যাঘাত : খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়লে শরীরের বিপাকক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে না, ফলে অনিদ্রা বা ঘুমের ব্যাঘাত দেখা দিতে পারে। এছাড়াও দেরিতে খাবার খেলে অদ্ভুত স্বপ্নও দেখতে পারেন। দেরিতে খাওয়ার ফলে হরমোন চিহ্নিতকারীর নেগেটিভ প্রোফাইল তৈরি হতে পারে, যেমন উচ্চ গ্লুকোজ এবং ইনসুলিন, যা ডায়াবেটিসের সঙ্গে জড়িত। কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড, যা হৃদরোগের সমস্যা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত অবস্থার সঙ্গে যুক্ত।

দুর্বল হজম : রাতে দেরিতে খেলে খাবার যথাযথভাবে হজম হতে পারে না। ঘুমাতে যাবার কিছুক্ষণ সময় আগে খাবার খেলে পাকস্থলী স্বাভাবিকভাবে হজমের কাজ সম্পন্ন করতে পারে না, ফলে অম্লতা, গ্যাস, বুক জ্বালা ও বদহজমের সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও এতে দীর্ঘমেয়াদী পাকস্থলীর সমস্যাও দেখা দিতে পারে। 

হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বেশি : এছাড়াও রাতে দেরিতে খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন রোগ ভুগতে হয়। এমনকি এটি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে যারা থাইরয়েড রোগ, পিসিও-ডি এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য এটি আরও ক্ষতিকর হতে পারে। 

আমরা আমাদের রাতের খাবারে সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে অভ্যস্ত। শাক-সবজি শুরু করে মাছ-মাংস পর্যন্ত, আমাদের খাবারে প্রায়শই উচ্চমাত্রার লবণের মাত্রা থাকে। রাতের বেলা এই লবণাক্ত খাবার খাওয়ার ফলে এটি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।


ডায়াবেটিসের ঝুঁকি : 

রাতের খাবার দেরিতে খাওয়ার ফলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়তে পারে, যা টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে মিষ্টি বা কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার দেরিতে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

রোগ প্রতিরোগ ক্ষমতা হ্রাস : রাতে দেরি করে খেলে দেহে ফ্রি রেডিক্যাল বেড়ে গিয়ে কোষের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়। এ ছাড়া এতে রোগ প্রতিরোগ ক্ষমতা কমে যায়, ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

লাবণ্য নষ্ট হয়ে যাওয়া : রাতে দেরি করে খেলে বৃদ্ধিজনিত হরমোনের উৎপাদন ব্যাহত হয়। এতে বিপাকের বিঘ্ন ঘটে শরীরের লাবণ্য নষ্ট হয়।


আদর্শ রাতের খাবারের সময়

রাতের খাবারের জন্য সর্বোত্তম সময় হল সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে, যা শরীরকে ঘুমানোর আগে খাবার হজম করার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেয়। 

খাবারের তালিকায়, হালকা ও সহজপাচ্য খাবার বেছে নিন। পর্যাপ্ত পানি পান করুন  এবং খাওয়ার পরপরই না শুয়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন। সুস্থ থাকতে হলে সঠিক সময়ে সুষম খাবার খাওয়া এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। তাই সময়মত খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং সুস্থ জীবনযাপন করুন!

ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health

ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।


Follow Me -

Facebook : Dr. Abida Sultana 

Youtube : Dr. Abida Sultana 

X : Dr. Abida Sultana 

tiktik : Dr. Abida Sultana 

No comments

Powered by Blogger.