Header Ads

প্রতিদিনের খাবারে প্রাকৃতিক উপাদান বাড়াবেন যেভাবে | ডা আবিদা সুলতানা | How to increase natural ingredients in your daily diet | Dr. Abida Sultana

প্রতিদিনের খাবারে প্রাকৃতিক উপাদান বাড়াবেন যেভাবে | ডা আবিদা সুলতানা | How to increase natural ingredients in your daily diet | Dr. Abida Sultana

আজকের ব্যস্ত নগরজীবনে আমরা প্রায়ই সময়ের অভাবে তৈরি খাবার, ফাস্টফুড কিংবা প্রক্রিয়াজাত পণ্যের দিকে ঝুঁকে পড়ি। অথচ এই ধরনের খাবারে থাকা কৃত্রিম রং, সংরক্ষণকারী রাসায়নিক দ্রব্য এবং অতিরিক্ত চিনি-লবণ শরীরের ওপর দীর্ঘমেয়াদে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।

ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন এর মতে, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও কিছু ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। তাই সুস্থ জীবনযাপনের জন্য খাদ্যতালিকায় প্রাকৃতিক উপাদান অন্তর্ভুক্ত করা খুব জরুরি। কিন্তু অনেকেই জানেন না, সহজ উপায়ে কীভাবে প্রতিদিনের খাবারে এসব উপাদান যুক্ত করা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রতিদিনের খাবারে কীভাবে প্রাকৃতিক উপাদান যোগ করবেন-

১. দিনের শুরু হোক স্বাস্থ্যকর

দিনের শুরুতেই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে শরীরকে চাঙ্গা করা যেতে পারে। গরম পানি, লেবুর রস ও সামান্য মধু মিশিয়ে পান করলে তা বিপাক ক্রিয়া বাড়ায় ও ডিটক্সিফিকেশনে সহায়তা করে। এতে চাইলে এক চিমটি হলুদ বা অল্প আদার রস যোগ করে নেওয়া যায়, যা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে কাঁচা হলুদে থাকা কারকিউমিন শরীরের প্রদাহ কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

২. প্রতিদিন ফল খান

প্রতিদিনের খাবারে মৌসুমি ফল ও শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত উপকারী। আপেল, পেয়ারা, কলা, আম, আঙুর, পেঁপের মতো ফল এবং লাউ, মিষ্টি কুমড়া, করলা, ঢেঁড়স, পালং শাক ইত্যাদি সবজি ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। ইউএসডিএ-র গবেষণা অনুসারে, প্রতিদিন অন্তত পাঁচ ধরণের ফল ও সবজি খেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় শতকরা ২৫-৩০ ভাগ কমে।

৩. মসলা নিয়ে সতর্ক হোন

রান্নায় কৃত্রিম গন্ধযুক্ত প্রক্রিয়াজাত মশলার পরিবর্তে আদা, রসুন, পেঁয়াজ, শুকনো মরিচ, ধনে ও জিরার মতো প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করলে খাবারের স্বাদ যেমন বাড়ে, তেমনি শরীরের জন্যও তা নিরাপদ। বিশেষ করে রসুনে থাকা অ্যালিসিন নামক যৌগ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ও কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক। তাই কেনা গুঁড়া মসলার পরিবর্তে বাড়িতে মসলা ব্লেন্ড করে রাখতে পারেন।

৪. রিফাইন্ড সুগার বা প্রক্রিয়াজাত চিনির বিকল্প ব্যবহার করুন

চিনির বিকল্প হিসেবে খেজুর গুড়, নারকেল চিনি বা মধু ব্যবহার করা যেতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরামর্শ দেয়, দৈনিক চিনি গ্রহণ সীমিত রেখে প্রাকৃতিক বিকল্প বেছে নেওয়া ভলো। মিষ্টান্ন তৈরিতে কিংবা চায়ে খেজুর গুড় ব্যবহার করলে তা শরীরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলকভাবে কম রাখে।

৫. লবণ নিয়ে সতর্ক হোন

লবণের ক্ষেত্রেও হিমালয়ান পিংক সল্ট বা সমুদ্রলবণ স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে। এসব প্রাকৃতিক লবণে অতিরিক্ত সোডিয়ামের পরিবর্তে থাকে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ক্যালসিয়াম, যা শরীরের ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

৬. শরীরের জন্য উপকারী প্রোটিন খান

প্রোটিনের উৎস হিসেবে ডাল, ছোলা, মটরশুঁটি, বাদাম, ডিম, দুধ, সয়াবিন এবং টোফু অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এসব প্রাকৃতিক উৎস হজমে সহায়ক ও কোলেস্টেরল মুক্ত। দ্য অ্যামেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন অনুসারে, উদ্ভিদভিত্তিক প্রোটিন দীর্ঘমেয়াদে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

৭. বাড়িতেও কিছু উৎপাদন করতে পারেন

প্রাকৃতিক খাবার গ্রহণের পাশাপাশি, উৎস যদি হয় নিজের হাতে গড়া, তবে সেটা আরও তৃপ্তি দিবে। ছাদবাগান বা বারান্দায় ছোট টবে ধনেপাতা, পুদিনা, মরিচ, টমেটো, লেবু, তেজপাতা, নিমপাতা ইত্যাদি চাষ করে নিজের প্রয়োজনে তাজা উপাদান সংগ্রহ করা যায়। এতে শুধু বিষমুক্ত খাবার পাওয়া নয়, বরং মানসিক প্রশান্তিও মেলে। গবেষণায় দেখা গেছে, বাগানচর্চা উদ্বেগ ও বিষন্ণতা কমাতে সহায়ক।

৮. সংরক্ষণের দিকেও খেয়াল রাখুন

খাবার সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও প্রাকৃতিক উপায় বেছে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। চাল বা ডালে নিমপাতা দিলে তা পোকামাকড় থেকে রক্ষা পায়। গাছের পাতা বা কলাপাতায় খাবার মোড়ানো যেমন পরিবেশবান্ধব, তেমনি স্বাস্থ্যকর। এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্লাস্টিকের মোড়কের তুলনায় প্রাকৃতিক উপকরণে মোড়ানো খাবারে রাসায়নিক সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক কম।

সব মিলিয়ে বলা যায়, প্রাকৃতিক উপাদান দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা কঠিন কিছু নয়। শুধু অভ্যাসের সামান্য পরিবর্তন এবং সচেতনতাই পারে আপনাকে ও আপনার পরিবারকে রাখতে সুস্থ ও সতেজ।


প্রতিদিনের খাবারে প্রাকৃতিক উপাদান বাড়াবেন যেভাবে | ডা আবিদা সুলতানা

How to increase natural ingredients in your daily diet | Dr. Abida Sultana


ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health

ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।


Follow Me -

Facebook : Dr. Abida Sultana 

Youtube : Dr. Abida Sultana 

X : Dr. Abida Sultana 

tiktik : Dr. Abida Sultana 

No comments

Powered by Blogger.