Header Ads

ডিভাইসের ব্লু লাইট থেকে চোখকে রক্ষা করবেন যেভাবে | ডা আবিদা সুলতানা | How to protect your eyes from blue light from devices | Dr. Abida Sultana

ডিভাইসের ব্লু লাইট থেকে চোখকে রক্ষা করবেন যেভাবে | ডা আবিদা সুলতানা | How to protect your eyes from blue light from devices | Dr. Abida Sultana

আজকের ডিজিটাল যুগে আমরা প্রায় সবাই দিনের বেশিরভাগ সময় কাটাই কোনো না কোনো স্ক্রিনের সামনে। অফিসে ল্যাপটপ, বাসায় মোবাইল ফোন, অবসরে ট্যাব কিংবা টেলিভিশন সব মিলিয়ে আমাদের চোখ যেন কখনই বিশ্রাম পায় না। বিশেষ করে করোনা মহামারির পর থেকে অনলাইন ক্লাস, ভার্চুয়াল মিটিং এবং রিমোট জবের প্রসার চোখের ওপর চাপকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এই আধুনিক জীবনযাপনের সঙ্গে সঙ্গে একটি সমস্যাও বড় হয়ে উঠছে – চোখের স্বাস্থ্য। দীর্ঘসময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখে ক্লান্তি, শুষ্কতা, ঝাপসা দেখা, এমনকি মাথাব্যথার মতো সমস্যায় ভুগছে অনেকেই। আর এই সমস্যার পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে স্ক্রিন থেকে নির্গত হওয়া ‘নীল আলো’ বা ব্লু লাইট।

ব্লু লাইট কী? এটি কেন ক্ষতিকর?

স্ক্রিন থেকে যে আলো বের হয়, তার মধ্যে এক ধরনের উচ্চশক্তির দৃশ্যমান আলো থাকে, যাকে ব্লু লাইট বলা হয়।

১. এটি আমাদের রেটিনার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।

২. দীর্ঘসময় এই আলোর সংস্পর্শে থাকলে চোখের পেশিতে চাপ পড়ে, চোখে শুষ্কতা ও ক্লান্তি দেখা দেয়।

৩. ব্লু লাইট মেলাটোনিন নামক ঘুমের হরমোনের নিঃসরণে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে অনেক সময় রাতে ঘুমের সময়ও এর প্রভাব পড়ে। ঘুম আসতে চায় না, কিংবা বারবার ঘুম ভেঙে যায়।

কীভাবে রক্ষা করবেন চোখ

১. এই সমস্যা থেকে মুক্তির অন্যতম কার্যকর উপায় হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে ব্লু লাইট ফিল্টার চশমা। এই চশমার লেন্সে বিশেষ এক ধরনের কোটিং থাকে, যা স্ক্রিন থেকে নির্গত হওয়া ক্ষতিকর নীল আলোর একটি বড় অংশ ব্লক করে। এর ফলে চোখে আলো কম পড়ে, চোখ কম ক্লান্ত হয় এবং দীর্ঘসময় কাজ করার পরও চোখে অস্বস্তি কম অনুভূত হয়।

শুধু তাই নয়, ঘুমের সমস্যাও অনেকটা কমে যায় এই চশমা ব্যবহারে। যারা প্রতিদিন কমপক্ষে ৬-৮ ঘণ্টা স্ক্রিনের সামনে কাজ করেন, বিশেষ করে প্রোগ্রামার, ডিজাইনার, সাংবাদিক, অনলাইন শিক্ষক, অথবা শিক্ষার্থী তাদের জন্য এই চশমা হতে পারে চোখের রক্ষাকবচ।

২. ব্লু লাইট ফিল্টার চশমার পাশাপাশি অ্যান্টি-রিফ্লেকটিভ কোটিং যুক্ত চশমাও হতে পারে চোখের সুরক্ষার আরেকটি ভালো উপায়। এই চশমাগুলো স্ক্রিনের প্রতিফলিত আলো বা গ্লেয়ার কমিয়ে দেয়, যার ফলে চোখে বাড়তি চাপ পড়ে না।

যদি আপনি ইতোমধ্যেই প্রেসক্রিপশন চশমা ব্যবহার করেন, তাহলে লেন্সে ব্লু লাইট ফিল্টার কোটিং যোগ করতে পারেন। এটি একদিকে যেমন আপনার দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখবে, অন্যদিকে স্ক্রিনের ক্ষতিকর আলোর প্রভাব থেকেও রক্ষা করবে।

চশমা কখন ব্যবহার করবেন?

ব্লু লাইট ফিল্টার চশমা কেবল অফিস বা কাজের সময়ই নয়, বরং পুরোদিন ব্যবহার করার জন্যই উপযোগী। যারা ঘরে বসে অনলাইন সিরিজ দেখেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় দীর্ঘসময় ব্যয় করেন কিংবা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফোন ঘাঁটেন তাদের জন্যও এটি উপকারী।

যদি আপনি লক্ষ্য করেন যে স্ক্রিন ব্যবহারের পর চোখ জ্বালা করে, চোখ লাল হয়ে যায়, অথবা ঘুমে সমস্যা হচ্ছে তাহলে এখনই সময় ব্লু লাইট ফিল্টার চশমা ব্যবহারের।

বাজারে এখন অনেক ধরনের ব্লু লাইট ফিল্টার চশমা পাওয়া যায়, কিন্তু সব চশমা সমান কার্যকর নয়। অনেক সময় শুধু ফ্যাশনের জন্য তৈরি চশমাগুলো আসল ব্লু লাইট প্রতিরোধ করতে পারে না। এজন্য চশমা কেনার আগে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।

এছাড়া চশমার লেন্সে যেন মূল ব্লু লাইট ফিল্টার কোটিং থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজন হলে নামকরা ব্র্যান্ডের পণ্য বেছে নিতে পারেন, এতে ঠকার সম্ভবনা কম।

আরও কিছু সতর্কতা

চশমা ব্যবহারের পাশাপাশি কিছু সাধারণ অভ্যাস গড়ে তুললে চোখ থাকবে আরও বেশি সুরক্ষিত।

১. প্রতি ২০ মিনিট পর ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরের দিকে তাকানো।

২. স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা প্রয়োজন অনুযায়ী সমন্বয় করুন। সবসময় সর্বোচ্চ উজ্জ্বলতায় রাখবেন না।

৩. রাতে স্ক্রিনে নাইট মোড বা ব্লু লাইট ফিল্টার চালু রাখুন।

৪. আরেকটা কাজ করযে পারেন, কাজের মাঝে চোখে পানির ঝাপটা দিন বা অল্প সময়ের জন্য চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নিন।

ডিজিটাল স্ক্রিন আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে, একথা যেমন সত্য, তেমনি চোখ আমাদের শরীরের অমূল্য সম্পদ। তাই প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার পাশাপাশি নিজেদের শরীরের যত্নও নিতে হবে। ব্লু লাইট ফিল্টার চশমা হতে পারে এই যত্ন নেওয়ার একটি ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। একটু সচেতন হলেই আমরা রাখতে পারি চোখকে সুস্থ, সতেজ এবং বিশ্রামপ্রাপ্ত, যেন আমরা দেখতে পারি আরও বহু রঙিন দিন।


ডিভাইসের ব্লু লাইট থেকে চোখকে রক্ষা করবেন যেভাবে | ডা আবিদা সুলতানা

How to protect your eyes from blue light from devices | Dr. Abida Sultana


ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health

ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।


Follow Me -

Facebook : Dr. Abida Sultana 

Youtube : Dr. Abida Sultana 

X : Dr. Abida Sultana 

tiktik : Dr. Abida Sultana 

No comments

Powered by Blogger.